বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ সিল্যান্ড


পৃথিবীতে অসংখ্য ছোট বড় দেশ রয়েছে ,
আয়তনের দিক দিয়ে রাশিয়া পৃথিবীর সবথেকে বৃহৎ দেশ
এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অনুযায়ী বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটি

তবে বিশ্বে আর একটি ক্ষুদ্রতম দেশ রয়েছে
দেশটির নাম সিল্যান্ড।
এটি একটি অণুরাষ্ট্র (মাইক্রোনেশন)।
এখানকার বাসিন্দারা নিজেদেরকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করলেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি নেই।
দেশটির মোট আয়তন প্রায় ৫৫০ বর্গমিটার।

ইংল্যান্ডের উত্তর সাগরে উপকূল থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার সাগরের গভীরে দেশটির অবস্থান।
দেশটি সাগরের উপর ভাসমান অবস্থায় আছে।
মাটিতে পুতে রাখা দুটি বড় বড় ইস্পাতের পাইপের উপর ভর করছে দেশটি।
দেশটিতে কোনও মাটি নেই। এর পুরোটাই ইস্পাতে তৈরি।


দেশটির নিজস্ব রাজধানী রয়েছে যার নাম এইচএম ফোর্ট রগ।
দেশটিতে একটিমাত্র ঘর আছে যেটি দেশের রাজপ্রাসাদ।
সেখানে দেশটির নিজস্ব পতাকা উড়তে দেখা যায়।
রয়েছে নিজস্ব হেলিপ্যাড, সংবিধান, মুদ্রা, পাসপোর্ট, কয়েন ও জাতীয় সংগীত।

দেশটির মুদ্রা ‘সিল্যান্ড ডলার’ অবশ্য বাইরের দেশে চলে না। অফিসিয়াল ভাষা ইংরেজি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডের উপকূলে কয়েকটি সমুদ্র দুর্গ বানায়।
জার্মান সেনাদের আক্রমন ও গতিবিধি পর্যবেক্ষনের জন্য এগুলো তৈরি করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য দুর্গগুলো ভেঙে ফেলা হলেও আইনী জটিলতায় এটি ভাঙতে পারেনি।
টিকে থাকা মউনশেল সি ফোর্টই এখন সিল্যান্ড।

২০০৬ সালের ২৩ জুন সিল্যান্ডে একবার অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়।
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগে।
অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ইংল্যান্ডের উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার এসে তাদেরকে উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে সিল্যান্ডকে মেরামত করা হলে ২০০৬ সালের নভেম্বরে তারা আবার সিল্যান্ডে ফিরে যান।

১৯৬৭ সালের ২রা সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ নাগরিক মেজর প্যাড রয় বেটস এই জায়গাটির স্বত্বাধিকারী হন।
পরে তিনি দেশটিকে একটি স্বাধীন মাইক্রো রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন।

দেশটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকলেও কোনও দেশ এটির বিরোধীতা করেনি।
রয় বেটস ও তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর এখন দেশটির রাজা তাদের ছেলে মাইকেল।

যদিও তিনি ইংল্যান্ড এ বসবাস করেন।

বর্তমানে পৃথিবীর কোনো দেশ সিল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব ও বৈধতার স্বীকৃতি না দিলেও
এটি বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র।
মাত্র ৫৫০ বর্গ মিটারের এই রাষ্ট্রটি
বর্তমানে পর্যটন ও বিভিন্ন মিউজিক ভিডিও ধারণের স্থানে পরিণত হয়েছে।
গোটা সিল্যান্ডে রয়েছে একটি মাত্র ভবন ও একটি হেলিপ্যাড।
বর্তমান কর্তৃপক্ষের দাবী অনুসারে, ২৭ জন মানুষ এখানে বাস করেন।
তবে প্রকৃতপক্ষে, এখানে মাত্র ৪ জন স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
ইন্টারনেটে সিল্যান্ডের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে।
সেখানে সিল্যান্ডের নানা স্মারক, ডাকটিকিট, মুদ্রা ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যায়।
এছাড়াও আপনি চাইলে সিল্যান্ডের লর্ড, ব্যারন, কাউন্ট প্রভৃতি পদবী কিনতে পারবেন।
সেই সাথে সিল্যান্ডের পাসপোর্ট করে চাইলে ঘুরেও আসতে পারবেন দেশটি থেকে।

পৃথিবীর এই ক্ষুদ্রতম দেশ নিয়ে আপনাদের কোন মতামত থাকলে কামেন্ট বক্স এ আমাদের জানাতে পারেন

ধন্যবাদ




Comments